শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: সাগরে ইলিশ নাই। দেড়-দুই লাখ টাহা খরচা কইররা সাগরে যাইয়া হুদা আতে (হাতে) ফেরত আওয়া লাগছে।
বাড়িতে বাজার-সদায়ও নাই, পাওনাদারগো ডরে বাড়তেও যাইতে পারি না। হাচা কথা ভাই, মোরা এহন অসহায়। ’
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সাগর থেকে ফিরে আসা মো. খলিল মাঝি এভাবেই জেলেদের অবস্থার কথা জানালেন।
এদিকে বিষখালী নদীতে মাছ ধরা জেলে জালাল গাজী, চান মিয়া ও জামাল মিয়া বলেন, ‘নদীতে মাছ নাই, ত্যালের দাম আয়না। এক খেয়তে ৮৪০ টাকার তেল খরচ হয়, মাছ পাওয়া যায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই এ অবস্থা। কেমনে মাইয়া-পোলা নিয়া খামু কইতে পারিনা। মোগো কতা কেউ ভাবে না। ‘
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দেখা গেছে, সাগর থেকে অধিকাংশ ট্রলার খালি ফিরছে। কোনো কোনো ট্রলারে অল্পকিছু মাছ।
ট্রলার মালিকরা জানান, দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বাজার-সদায় নিয়ে ১০-১২ দিনের জন্য সাগরে মাছ ধরার জন্য যায় ট্রলারগুলো। এই খরচ এবং জেলেদের শ্রমের মূল্য অনুযায়ী আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কাটিয়ে অনেক আশা ভরসা নিয়ে সাগরে মাছ শিকার করতে যায় উপকূলের জেলেরা। কিন্তু তাদের আশা নিরাশা এবং হতাশায় পরিণত হয়েছে। সাগর থেকে খালি হাতেই উপকূলে ফিরছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো। কিন্তু মেলেনি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। সব মিলিয়ে উপকূলের জেলেদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
জেলেরা বলছেন, যে মাছ পাওয়া গেছে তেলের দাম বৃদ্ধি থাকায় তা বিক্রি করে তাদের খরচ উঠবে না। আর মৎস্য বিভাগ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাছের সংখ্যা কম। তবে সামনে মাছ বাড়তে পারে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম মিয়া বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে ট্রলার পাঠাওনো হলেও তেমন মাছ পাওয়া যায়নি। যা পাওয়া গেছে তাতে বাজার খরচও ওঠেনি। জেলেদের ভাগের টাকা দিব কিভাবে। আবার কিভাবে ট্রলার সাগরে পাঠাবো চিন্তায় আছি।
পাথরঘাটা জেলে পল্লীর একাধিক জেলে জানান, গেল দুই সপ্তাহে সাগরে তেমন মাছ পাওয়া মত যায়নি। যা পাওয়া যায় তাতে খরচ ওঠেনি।
সাগরে যেতে পারেননি তারা।
তারা আরও বলেন, এখন আর আগের মতো সাগরে জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলে না। তার উপর প্রতিনিয়ত আবহাওয়া খারাপের খবর তো আছেই।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, জেলেদের কাছ থেকে শোনা যায় সাগরে মাছ নেই, এমন সময় মাছ না পাওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হতে পারে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, গভীর সমুদ্রে মাছ আছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদ-নদীতে মাছের সংখ্যা কমছে।